আটলান্টিকসংবাদ ডেস্ক: গত ২৫ জুলাই, ২০২৪ নিউজার্সী অঙ্গরাজ্যের আটলান্টিক সিটিতে অবস্থিত ইসলামিক সেন্টার অব আটলান্টিক সিটির ম্যানেজমেন্ট কমিটির তত্ত্বাবধানে নিউজার্সীর মেইস ল্যান্ডিং সিটির লেক লেনেপি পার্কে উদযাপিত হয় “ফ্যামিলি ডে” । এই আয়োজনের মাধ্যমে মুসলমানদের মধ্যে সামাজিক বন্ধনকে আরও সুসংহত করাই ছিল আয়োজনের মূল উদ্দেশ্য ।
ইসলামিক আবহ বজায় রেখে প্রায় ৪-৫ শতাধিক লোকের অনুষ্টান করাও যে সম্ভব তা এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রমানিত হয়েছে। এই অনুষ্ঠানের সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন প্রায় ২ শতাধিক পরিবার এবং বিশাল কর্মীবাহিনী। ধর্মীয় মূল্যবোধের প্রতি শ্রদ্ধার কারনে ইসলামিক সেন্টার অব আটলান্টিক সিটির উদ্যোগে আয়োজিত যে কোন সামাজিক অনুষ্ঠানে আন্তরিকতার সাথে কাজ করে যাচ্ছেন এই কর্মীবাহিনী।
৯৫% অমুসলিম দেশে ইসলাম ধর্মীয় আবহ রক্ষা করা সত্যিই একটি কঠিন কাজ। কিন্তু সেই কঠিন কাজটি কোন ব্যক্তি অথবা প্রতিষ্ঠানকে হাতে নিতে হবে এবং এগিয়ে নিতে হবে পরবর্তী প্রজন্মকে নিজেদের স্বকীয়তা, ইসলামিক ও সামাজক মূল্যবোধের মধ্য দিয়ে গড়ে তোলার জন্য। ইসলামিক সেন্টার অব আটলান্টিক সিটি ইতিমধ্যে মুসলমানদের জন্য কবরস্থান নির্মান, গত কয়েক বছর ধরে ধর্মীয় মূল্যবোধ বজায় রেখে ২৫০০ থেকে ৩০০০ মুসলিমদের অংশগ্রহনে মেজবানের আয়োজন, প্রায় হাজার খানেক লোকের অংশগ্রহনে প্রতি শুক্রবারে জুমার নামাজের আয়োজন, হজের সময় হজ সেমিনারের আয়োজন,প্রতি সপ্তাহে শিশু-কিশোর এবং বয়স্কদের জন্য ইসলামিক আলোচনার আয়োজন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ইসলামিক স্কলারদেকে নিয়ে ধর্মীয় আলোচনার মাধ্যমে ধর্মীয় মূল্যবোধকে সুসংহত করা এবং প্রতি শনি ও রবিবার ছেলে-মেয়েদেরকে ইসলামিক শিক্ষা প্রদানের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রে ইতিমধ্যে বিপুলভাবে সমাদৃত হয়েছে।
সকাল ১১টায় চিকেন বারবাকিউ অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে শুরু হয় “ফ্যামিলি ডে” অনুষ্ঠান। দুপুর ২টা পর্যন্ত বিরামহীনভাবে পরিবেশন করা হয় সুস্বাদু বারবাকিউ। ইসলামিক আবহ অব্যহত রাখার জন্য মহিলাদের ছাউনীতে পৌছে দেওয়া হয় মহিলাদের বারবাকিউ।১০ জন মহিলা কর্মী প্রায় ২ শতাধিক মহিলাদের কাছে সুস্বাদু বারবাকিউ পরিবেশন করেন।সাধারনত বাংলাদেশীদের অনুষ্ঠানে শুধু বাংলাদেশীরাই উপস্থিত থাকেন। এই আয়োজনে বাংলাদেশীরা ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন পাকিস্তানী,ইন্ডিয়ান, মিশর, সুদান, ইয়ামেন, আফগানিস্তানসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের মুসলমান।
উপস্থিত অতিথিদের জন্য ছিল জোহর নামাজের ব্যবস্থা, যাতে অংশ নিয়েছিল উপস্থিত অতিথীবৃন্দ। এছাড়াও মহিলাদের নামাজের জন্য ছিল সম্পূন্ন পৃথক ব্যবস্থা যাতে অংশ নিয়েছিলেন উপস্থিত মহিলারা।
দুপুর দেড়টা থেকে আড়াইটা পর্যন্ত মুষল ধরে বৃষ্টি পড়ার কারনে ধারনা করা হয়েছিল ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের জন্য কোন খেলাধুলার আয়োজন করা সম্ভব হবে না। আবহাওয়ার পরিস্থিতি মাথায় রেখে মীর হোসেন হেভেন আগেই ব্যবস্থা নিয়েছিলেন ১০টি ইনডোর গেমের। ইমাম তৌফিকের তত্ত্বাবধানে এবং নুরনবী এবং মাহমুদ শাহের সহযোগিতায় প্রচন্ড বৃষ্টির মধ্যে বিভিন্ন বয়সী ছেলেমেয়েদের সবগুলো খেলাধুলা সম্পন্ন করা হয় ইনডোরে। উপস্থিতি প্রায় ৫০-৬০ জন ছেলে-মেয়েদের প্রচুর আনন্দ দেয় ভিন্নধর্মী খেলাধুলাগুলো।
তিনটার সময় এসে পৌছে যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম বিখ্যাত রেষ্টুরেন্ট খলিল বিরিয়ানির খাবার। সুস্বাদু খাবার পরিবেশন শেষে বিকেল চারটায় শুরু হয় বড়দের বিভিন্ন খেলাধুলার আয়োজন। মহিলাদের খেলাধূলার মধ্যে দেখা যায়নি পুরুষদের কোন ভীড়।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত প্রায় ৯৮ শতাংশ মহিলা এবং মেয়েরা উপস্থিত হয়েছিলেন ইসলামিক ড্রেস পড়ে যা ছিল খুবই ব্যতিক্রমধর্মী ব্যাপার। ছিল না কোন রেফেল ড্রয়ের আয়োজন। সবশেষে বলা যায় সদিচ্ছা থাকলে ইসলামিক আবহ রক্ষা করেও ৪-৫ শত লোকের অনুষ্ঠান আয়োজন সম্ভব এই আয়োজনটি তারই প্রমান।
অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ইসলামিক সেন্টার অব আটলান্টিক সিটির প্রতিষ্ঠাতা ইকবাল হোসাইন এবং আবদুর রহিম,বাংলাদেশ প্রেস ক্লাব অফ আটলান্টিক সিটির সভাপতি আকবর হোসাইন, বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অফ সাউথজার্সীর সভাপতি জহিরুল ইসলাম বাবুল,বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব আটলান্টিক কাউন্টির সভাপতি শহীদ খান, নিউজার্সী বিএনপি সাউথ সাধারন সম্পাদক রহমান বাবুল, চটগ্রাম বিশববিদ্যালয় মাষ্টার্স এলামনাই এসোসিয়েশন সাধারন সম্পাদক মীর হোসাইন হেভেন, সাউথজার্সী মেট্রো আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা জাহাঙ্গীর ভূইয়া,সাউথজার্সী মেট্রো আওয়ামীলীগ সহ-সভাপতি আহসান হাবিব, জালালাবাদ সমিতির সাধারন সম্পাদক শহীদসহ সাউথজার্সীতে বসবাসরত অন্যান্য গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।