টস জিতে ব্যাটিং করতে নেমে শুরু থেকেই খানিকটা অস্বস্তিতে ছিলেন বাংলাদেশের দুই ওপেনার জাকির হাসান এবং নাজমুল হোসেন শান্ত। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই উইকেট হারাতে পারতো বাংলাদেশ।
তাদের দুজনের টিকে যাওয়া জুটি ভাঙেন জয়দেব উনাদকাট। ইনিংসের ১৫তম ওভারে পঞ্চম বলে জাকিরকে ফেরান বাঁহাতি এই পেসার। । চট্টগ্রাম টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে সেঞ্চুরি করা তরুণ এই ব্যাটার এদিন আউট হয়েছেন ১৫ রানে। জাকির ফেরার পরের ওভারেই আউট হয়েছেন শান্ত। সাজঘরে ফিরে যেতে হয় ২৪ রান করা শান্ত। তাতে নিজেকে খানিকটা দুর্ভাগ্যবান মনে করতে পারেন তিনি।
৪ বলের ব্যবধানে ২ উইকেট হারানোর পর প্রতিরোধ গড়ে তোলেন সাকিব এবং মুমিনুল। দেখেশুনে ব্যাটিং করার সঙ্গে বাউন্ডারিও মেরেছেন তারা দুজন। পেসারদের বিপক্ষে খানিকটা বেগ পেতে হলেও অশ্বিনকে বেশ ভালোভাবেই খেলেছেন তারা।
মুমিনুলের সঙ্গে দারুণ ব্যাটিং ঘুরে দাঁড়িয়ে স্বস্তি নিয়ে লাঞ্চে গিয়েছিলেন তিনি। তবে লাঞ্চ থেকে ফিরে প্রথম বলেই সাজঘরে ফিরতে হয়েছে তাকে।
উমেশের লেংথ ডেলিভারিতে মিড অফের উপর দিয়ে উড়িয়ে মারতে চেয়েছিলেন সাকিব। তবে ঠিকঠাক টাইমিং করতে না পারায় চেতেশ্বর পূজারার হাতে ক্যাচ দিয়েছেন বাংলাদেশের টেস্ট অধিনায়ক।
ফলে দলকে বিপদে ফেলে সাকিবকে ফিরতে হয়েছে ১৬ রানে। এরপর অবশ্য মুমিনুল ও মুশফিকুর রহিম মিলে জুটি গড়ার চেষ্টা করেন। তারা দুজনে মিলে যোগ করেন ৪৮ রান। মুশফিককে ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন উনাদকাট। অশ্বিনের এক ওভারে টানা তিন চার মারা মুশফিক আউট হয়েছেন ৪৬ বলে ২৬ রান করে। মুশফিক ফিরলেও হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন মুমিনুল।
উনাদকাটের ওভারে দুই চার মেরে ৭৮ বলে ক্যারিয়ারের ১৬তম টেস্ট হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন বাঁহাতি এই ব্যাটার। ছয়ে নেমে বেশ ভালো শুরুর আভাসই দিয়েছিলেন লিটন দাস। খানিকটা দ্রুত রান তোলায় মনোযোগী ছিলেন ডানহাতি এই ব্যাটার। সিরাজের ওভারে পয়েন্ট দিয়ে চার মারার পরের বলে ডিপ ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ার লেগ দিয়ে পুল করে ছক্কা মারেন লিটন।
দারুণ শুরু করা লিটন আউট হয়েছেন ২৫ রানে। প্রথম সেশনে রাত তুলতে বেগ পেতে হলেও দ্বিতীয় সেশনে দ্রুত রান তুলে বাংলাদেশের ব্যাটাররা। দিনের সেশনে ২৯ ওভার ব্যাটিং করে ১০২ রান তুলেছে স্বাগতিকরা।
উইকেট থেকে বোলাররা বাড়তি সুবিধা না পাওয়ায় অনায়াসেই ব্যাটিং করতে পারছিলেন না বাংলাদেশের ব্যাটাররা। উইকেটে এসে ভালো শুরুর আভাস দিয়েছেন সবাই। তবে একমাত্র মুমিনুল ছাড়া কেউই ইনিংস বড় করতে পারেননি। ব্যাটিং অর্ডারে পদোন্নতি পেয়ে থিতুও হয়েছিলেন মিরাজ। কিন্তু ইনিংস বড় করতে পারেননি এই অলরাউন্ডার। উমেশের অফ স্টাম্পের খানিকটা বাইরের বল খেলতে গিয়ে পান্তের গ্লাভসে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ৫১ বলে ১৫ রান করা মিরাজ। ডানহাতি এই ব্যাটার আউট হওয়ার পর থিতু হতে পারেননি নুরুল হাসান সোহান।
টিকতে পারেননি তাসকিন আহমেদও। উমেশের বলেই ড্রাইভ করতে গিয়ে সিরাজের হাতে ক্যাচ দিয়েছেন তিনি। অশ্বিনের অফ স্টাম্পের বাইরের লেংথ ডেলিভারি খেলার আগ্রহই দেখাননি মুমিনুল। তবে বল খানিকটা টার্ন করে মুমিনুলের গ্লাভসে লাগে।
পান্ত ক্যাচের আবেদন করতেই আউট দেন আম্পায়ার আর প্যাভিলিয়নের পথে হাঁটতে থাকেন অভিজ্ঞ এই ব্যাটার। পুরোটা দিন দারুণ ব্যাটিং করা মুমিনুল শেষ পর্যন্ত আক্ষেপ নিয়ে ফিরতে হয়েছে ৮৪ রানের ইনিংস খেলে। তাতে মা্রত ২২৭ রানে অল আউট হয় বাংলাদেশ। ভারতের হয়ে চারটি করে উইকেট নিয়েছেন অশ্বিন এবং উমেশ।