আটলান্টিক সংবাদ ডেস্ক: গত ৮ মে বুধবার সন্ধ্যা ছয়টায় এগ হারবার টাউনশীপের হলি ট্রিনিটি চার্চ মিলনায়তনে মহা ধুমধামে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল বাংলা নববর্ষবরন এবং বাংলাদেশীদের প্রানের মেলা বৈশাখী মেলা। নিউজার্সির আটলান্টিক সিটি এলাকার ঐতিহ্যবাহী সংগঠন বেঙ্গল ক্লাব অব আটলান্টিক সিটির সভাপতি রানা কবির এবং সাধারণ সম্পাদক কাজল বড়াই এর নেতৃত্বাধীন নতুন কমিটি আয়োজিত এই বর্ণাঢ্য আয়োজনে উপস্থিত হয়েছিলেন প্রায় হাজার খানেক বাংলাদেশী। দল-মত নির্বিশেষে রং বেরংয়ের জামা পরিধান করে হাজারো দর্শনার্থীর এই আয়োজন ছিল আনন্দঘন পরিবেশে।
সম্পূর্ন বাংলাদেশী আমেজে পরিপূর্ন এই মেলায় বাংলাদেশের মেলার ন্যায় ছিল সব রকম আয়োজন। শত শত প্রবাসীর সমাগমে এই আয়োজনের অন্যতম অংশ ছিল পান্তা ভাত এবং ঈলিশ ভাজি।সিটির অন্যান্য সংগঠনগুলো গড্ডালিকাভাবে বৈশাখী মেলার আয়োজন করলেও বেঙ্গল ক্লাবের এই আয়োজন ছিল সম্পূন্ন ব্যতিক্রমধর্মী।
মেলার অন্যতম আকর্ষন ছিল বাংলাদেশের ৭০ এবং ৮০ দশকের স্বনামধন্য কিংবদন্তি শিল্পী এবং পল্লী গীতির সম্রাজ্ঞী নীনা হামিদ এবং গীতিকার, সুরকার এবং সংগীত শিল্পী ম. হামিদ। সম্মাননা জানানো হয় বাংলা সঙ্গীতের দুই কিংবদন্তিকে।দাড়িয়ে সন্মান জানান হাজারো বাংলাদেশী। গত দুই যুগ ধরে আটলান্টিক সিটির অন্যান্য সামাজিক সংগঠন কিংবদন্তি শিল্পী পল্লী গীতির সম্রাজ্ঞী নীনা হামিদ এবং গীতিকার, সুরকার এবং সংগীত শিল্পী ম. হামিদকে সন্মান না দেখালেও এবারই প্রথম বেঙ্গল ক্লাব সঠিকভাবে সন্মান দেখানোর চেষ্টা করেছে। বয়োবৃদ্ধ দুইজন প্রবীন শিল্পী জীবনের শেষ প্রান্তে এসে দেশে এবং বিদেশে অবস্থানরত সকল বাংলাদেশীদের কাছে তাদের সুস্বাস্থের জন্য দোয়া প্রার্থনা করেন।
জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে শুরু হওয়া অনুষ্ঠানের পর সান্তনা চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন স্থানীয় শিল্পীদের এসো হে বৈশাখ পরিবেশন ঊপস্থিত সবাইকে প্রচুর আনন্দ দেয়। স্থানীয় শিল্পীদের মধ্যে জয়ন্ত সিনহা, আসিফ আনোয়ার, শারমিন তারা, হেলাল হাসান , কাজী লিখনসহ অন্যান্য শিল্পীরা শুভ্রদেবের সংগীতানুষ্ঠান শুরুর আগ পর্যন্ত পুরো অনুষ্ঠানস্থল মাতিয়ে রেখেছিলেন।
সংগঠনের প্রেসিডেন্ট রানা কবির, সাধারন সম্পাদক কাজল বাড়ৈ, সহ সভাপতি আলী চৌধুরী তান্নু ট্রেজারার হেলাল হাসান, এবং যুগ্ন সাধারন সম্পাদক লিখনের সার্বিক তত্ত্বাবধানে সাজানো অনুষ্ঠানে সহযোগিতায় ছিলেন মিল্টন চৌধুরী, জয় দেব, ট্রেজারার হেলাল হাসান, জয়েন সেক্রেটারি লিখন, আরিফ, ফরহাদ সাংগঠনিক সম্পাদক আনিস জুয়েল, কায়সার, সুহেল আহমেদ, আসিফ আনোয়ার, কৃষ্ণা চৌধুরী। পুরো হলকে রঙ্গীনভাবে সাজানোর জন্য সার্বিক সহযোগিতায় ছিলেন মিরাজ খান,শহিদুল ইসলাম খান, অতশী চৈতী, মনির হোসেন, বাদল, অপরাজিতা ও অন্যান্য স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের পাশাপাশি শাড়ি,পাঞ্জাবি, জুয়েলারি সহ নিত্য প্রয়োজনীয় অন্যান্য সামগ্রীর সাথে ছিল খাওয়ার স্টল। উপস্থিত বালাদেশীরা খাওয়ার স্টল গুলো থেকে ছোলা, পিয়াজু, চটপটি,ফোসকা এবং চা নিজেরা যেমন খেয়েছেন তেমনি ভাবে বন্ধু বান্ধবদেরকে ও আপ্যায়িত করেছেন। রং বেরংয়ের পোষাকে অনুষ্ঠানস্থল পরিনত হয় একখন্ড বাংলাদেশে।কাজী লিখন, কাজল বড়াইসহ অন্যান্যদের উপস্থাপনা ছিল খুবই প্রানবন্ত।
সুন্দর এবং গোছালো একটি অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য উপস্থিত সকলেই বেঙ্গল ক্লাব অব আটলান্টিক সিটির সভাপতি রানা কবির এবং সাধারণ সম্পাদক কাজল বড়াই সহ সংগঠনের সকল নেতৃবৃন্দেকে ধন্যবাদ জানান।এছাড়াও মেলার অন্যতম আকর্ষন ছিল বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় শিল্পী শুভ্র দেবের দীর্ঘদিন পর সংগীত পরিবেষনা। বাংলাদেশের প্রতিভাবান শিল্পী শুভ্রদেবের সংগীত পরিবেশনা চলতে থাকে রাত সাড়ে এগারটা পর্যন্ত।অনুষ্ঠানে বিভিন্ন সামাজিক এবং রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ প্রেস ক্লাব অব আটলান্টিক সিটির সভাপতি আকবর হোসাইন এবং সাধারন সম্পাদক মোঃ শাহীন।আরও উপস্থিত ছিলেন প্রথম আলোর যুক্তরাষ্ট্রের সম্পাদক ইব্রাহিম চৌধুরী এবং নর্থ জার্সির কাউন্সিল ওমেন সিপরা উদ্দিনের সাথে ছিলেন স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।