আটলান্টিক সংবাদ ডেস্ক:এশিয়ান আমেরিকান সোসাইটি অব আটলান্টিক সিটির উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হয় গেল মাল্টি কালচারাল সাংস্কৃতিক উৎসব।গত ১৩ আগষ্ট,২০২৩ রবিবার,এশিয়ান আমেরিকান সোসাইটি অব আটলান্টিক সিটির উদ্যোগে আয়োজিত এই উৎসবের নতুন ভ্যানু ছিল আটলান্টিক সিটির শোবোট ক্যাসিনো এবং ইনডোর ওয়াটার পার্ক সংলগ্ন উম্মুক্ত মাঠ। এই প্রথম আটলান্টিক সিটির বোর্ড ওয়ার্ক সংলগ্ন কোন স্থানে এশিয়ান মাল্টি কালচারাল উৎসবের আয়োজন করা হল। আটলান্টিক সিটিতে মূলতঃ স্থানীয় সেন্ড ক্যাসেল ষ্টেডিয়ামে এশিয়ান এবং স্প্যানিশ আমেরিকানদের বিভিন্ন উৎসব অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। তবে এশিয়ান আমেরিকান সোসাইটি অব আটলান্টিক সিটির সভাপতি সুমন মজুমদারের প্রচেষ্টায় এইবারই প্রথম বোর্ড ওয়ার্ক সংলগ্ন উম্মুক্ত মাঠে অনুষ্ঠিত হল। তবে সভাপতি সুমন মজুমদার এই স্থানটি নির্ধারনে এবং আটলান্টিক সিটি সিআরডিএর অর্থায়নে গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা রেখেছেন।
আটলান্টিক সিটি এবং নিকটবর্তী সিটিগুলোতে বসবাসরত এশিয়ান আমেরিকানদের মধ্য বাংলাদেশ, ইন্ডিয়া, পাকিস্তান, ভিয়েতনাম, চায়না এবং ফিলিপাইনীর সংখ্যাই বেশী । ২০২০ সালে এশিয়ান আমেরিকান সোসাইটি অব আটলান্টিক সিটির সভাপতি সুমন মজুমদার, সাধারন সম্পাদক মোঃ শাহিন, কাউন্সিলম্যান আনজুম জিয়া এবং এশিয়ান আমেরিকান সোসাইটি অব আটলান্টিক সিটির বোর্ড অব ডাইরেক্টর আকবর হোসাইনের সার্বিক প্রচেষ্টায় সংগঠনটি গঠিত হওয়ার পর থেকেই গতানুগতিক অনুষ্ঠানের বাহিরে নিউজার্সীর সাউথজার্সীতে বসবাসরত এশিয়ানদেরকে নির্মল আনন্দ দেয়াসহ সামাজিক, রাজনৈতিক ক্ষেত্রে ঐক্য গড়ে তোলার লক্ষ্যে মূলত কাজ করে যাচ্ছেন নেতৃবৃন্দ। এছাড়াও ব্যতিক্রমধর্মী আয়োজন অব্যহত রেখেছেন, যা ইতিমধ্যে সকলের কাছে সমাদৃত এবং প্রশংসিত হয়েছে।
এশিয়ান আমেরিকান সোসাইটি অব আটলান্টিক সিটির কর্মকান্ডকে আরও বেগবান এবং সময়োপযোগী করার জন্য যুগপৎভাবে সহযোগিতা করে যাচ্ছেন আটলান্টিক সিটিতে ইন্ডিয়ান কালাচারাল শোর আয়োজক এবং প্রমোটর প্রভীন বিগ, কমিউনিটি ব্যক্তিত্ব বিনোদ ভেলোর,বালাজি এন্টারটেইনম্যান্টের কর্নধার রকি মাকাডিয়া,শান্তুনূ সরকার,মনোজিত সাহা এবং দীপক শাহ। সন্ধ্যা ৭টার মধ্য সম্পন্ন হয় মূলধারার রাজনীতিবিদ এবং আটলান্টিক সিটির দুইটি সামাজিক সংগঠন বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব সাউথজার্সীর সভাপতি জহিরুল ইসলাম বাবুল এবং বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব আটলান্টিক কাউন্টির সভাপতি শহীদ খানের বক্তব্য পর্ব। বিভিন্ন বয়সী ছেলে-মেয়েদের প্রতিভার প্রতিযোগিতা ছিল খুবই উপভোগ্য। এতে যেমনি ছিল বাংলাদেশী শিশু-কিশোরদের নজরুল,রবীন্দ্র,আধুনিক এবং ফোক গানের পরিবেশনা ঠিক তেমনি ইন্ডিয়ান ছেলে-মেয়েদের হিন্দী এবং পাঞ্জাবী গানের পরিবেশনা। সামিজিক এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদানের জন্য প্রায় দুই ডজন ব্যাক্তিকে সন্মানা পদক প্রদান করা হয়। ইতিমধ্যে রেডিং ষ্টেশন ৯২.৩ সহ বিভিন্ন মিডিয়ায় ব্যাপকভাবে মাল্টি কালচারাল সাংস্কৃতিক উৎসবের জন্য সংগঠনের সভাপতিসহ সকলকে ধন্যবাদ জানিয়েছে এবং সুন্দর এবং সুশৃংখল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্য বিপুল পরিমান প্রশংসা কুড়িয়েছে।
এদিকে বিভিন্ন অনলাইন পত্রিকা এবং প্রিন্ট মিডিয়ায় “আটলান্টিক সিটি স্কুল বোর্ডের সদস্য সুব্রত চৌধুরী বহুজাতিক সাংস্কৃতিক উৎসব’ সফল করায় সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন “ যার মাধ্যমে তিনি নিজেকে এশিয়ান আমেরিকান সোসাইটি অব আটলান্টিক সিটির কর্মকর্তা অথবা আয়োজক হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করার অপচেষ্ঠা চালিয়েছেন। সংগঠনের সভাপতি সুমন মজুমদার সাধারন সম্পাদক মোঃ শাহিন এবং বোর্ড অব ডাইরেক্টর আকবর হোসাইন জানান জনাব সুব্রত চৌধুরীর সাথে এশিয়ান আমেরিকান সোসাইটি অব আটলান্টিক সিটির কোন সম্পৃক্ততা নেই। নেতৃবৃন্দ ভবিষ্যতে এধরনের অবাঞ্চিত কাজ থেকে সুব্রত চৌধুরীকে দূরে থাকার জন্য অনুরোধ জানান।
দিনব্যাপী মাল্টি কালচারাল সাংস্কৃতিক উৎসবের মধ্যে ছিল পেরু, ডোমিনিকান রিপাবলিক,পোর্টারিকো, ইন্দোনেশিয়া, জ্যামাইকা, ঘানা, হন্ডুরাস বাংলাদেশ, ভারত, এবংপাকিস্তানের শিল্পীদের পরিবেশনায় নিজ নিজ দেশের নৃত্য এবং সংগীত পরিবেশন, এছাড়াও ঘুড়ি ওড়ানো, বিভিন্ন বয়সী ছেলে-মেয়েদের প্রতিভার প্রদশর্নী, এবং সন্মানা প্রদান । অনুষ্ঠানের উপস্থাপক প্রভীন বিগের উপস্থাপনা ছিল খুবই প্রানচঞ্চল এবং সাবলীল। তিনি সাবলীল উপস্থাপনার মাধ্যমে মাতিয়ে রেখেছিলেন উপস্থিত দর্শকদেরকে।
উৎসবে মূলধারার ’অতিথিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাষ্টের নিউ জার্সি ষ্টেটের সিনেটর ভিনসেন্ট পলিসতিনা,এসেম্বলিম্যান ডন গার্ডিয়ান, আটলান্টিক কাউন্টির শেরিফ এরিক শেফলার, আটলান্টিক সিটির পুলিশ প্রধান জেমস সারকোস,ফিফথ ওয়ার্ড কাউন্সিলম্যান আনজুম জিয়া, কাউন্সিলম্যান জেসি কার্টজ, মাইক লোপাজ,কংগ্রেসম্যান প্রার্থী টিম আলেকজানডার, আটলান্টিক কাউন্টির ডেমোক্র্যাট কমিটির চেয়ারম্যান মাইক সুলেমান,ষ্টেট সিনেটর প্রার্থী কেরেন ফিৎজ প্যাটরিক সহ মূলধারার রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ।
মাল্টি কালচারাল সাংস্কৃতিক উৎসব’ এর মূল আকর্ষণ ছিল ইন্ডিয়ান আইডল খ্যাত জনপ্রিয় সংগীত শিল্পী মোহাম্মদ দানিশের মনোজ্ঞ সংগীত পরিবেশনা। এছাড়া ইন্ডিয়ান আইডল খ্যাত আরেক জনপ্রিয় সংগীত শিল্পী শাইলি কাম্বলে,বাংলাদেশের জনপ্রিয় সংগীত শিল্পী কৃষ্ণা তিথি, পাকিস্তানের শিল্পী সোনু ভাট উৎসবে সংগীত পরিবেশন করেন।
ইন্ডিয়ান আইডল খ্যাত জনপ্রিয় সংগীত শিল্পী শাইলি কাম্বলের পরিবেশনা রাত সাড়ে আটটা থেকে শুর হয়ে ১০ টা পর্যন্ত বাংলাদেশ, ভারত, এবং পাকিস্তানের দর্শকবৃন্দ মন ভরে উপভোগ করেন। প্রায় দুই সহস্রাধিক এশিয়ান প্রবাসীদেরকে গানের তালে তালে নাচতে দেখা যায়। রাত দশটা থেকে শুরু হয় আরেক ইন্ডিয়ান আইডল খ্যাত জনপ্রিয় সংগীত শিল্পী মোহাম্মদ দানিশের মনোজ্ঞ সংগীত পরিবেশনা। তার অপূর্ব পরিবেশনায় চারিদিক থেকে আসতে থাকে প্রবাসী দর্শকবৃন্দ । সব মিলিয়ে এশিয়ান আমেরিকান সোসাইটি অব আটলান্টিক সিটির এই আয়োজন ছিল দীর্ঘদিন মনে রাখার মত একটি আয়োজন।