হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের কারাবন্দী নেতাদের মুক্তির জন্য সুপারিশ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
বৃহস্পতিবার (১৩ এপ্রিল) চট্টগ্রামের হাটহাজারী মাদরাসায় নূরানী বোর্ডের প্রশিক্ষণ কর্মশালা ও ইফতার মাহফিল শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এই কথা জানান তিনি।
দুদিন আগেই কারাবন্দী নেতাদের মুক্তি দাবি করে বিবৃতি দেয় হেফাজতের আমির মুফতি মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তাদের জামিন দেওয়ার কথাটা আলোচনা হয়েছে। আমরা পর্যায়ক্রমে সুপারিশ করছি, কোর্ট সেগুলো যাচাই করছে। একশ্রেণির হয়ে গেছে, বাকিদেরও আশা করি হয়ে যাবে। হেফাজতের পক্ষ থেকে আমাদেরকে কারাবন্দী নেতাদের একটি তালিকা দেওয়া হয়েছে। তালিকার অনুযায়ী আমরা তাদের মুক্তির জন্য সুপারিশ করছি। অধিকাংশ নেতাকে ইতিমধ্যে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।
সরকার মাদরাসা শিক্ষাকে যুগোপযোগী করতে কাজ করছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, সরকার কোনো নূরানী মাদরাসা বন্ধ করেনি, ভবিষ্যতেও করবে না। এই সরকার মাদরাসা শিক্ষাকে যুগোপযোগী গড়ে তুলতে কাজ করছে। কওমি মাদরাসা একটি বোর্ডের আওতায় পরিচালিত হয়। সরকার এতে হস্তক্ষেপ করে না।
হেফাজতের সাথে সরকারের সম্পর্ক কেমন জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের সাথে কারো বৈরি সম্পর্ক নেই, আমরা সুসম্পর্ক নিয়ে চলি। হেফাজত একটা ইসলামি চিন্তার, ইসলাম বিস্তারে তারা কাজ করে। আমরা এদেশে ৯০ শতাংশ মুসলমান। কাজেই তাদের চিন্তাধারা, তাদের কার্যকলাপ সেগুলো দ্বীন ইসলামের জন্য সহযোগিতা করছে।
এর আগে, অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আপনাদের সিলেবাস আপনারা করেছেন। আপনাদের সিলেবাসে সরকার কোনো হাত দেয়নি। আপনারা বেফাকের মাধ্যমে যা সিদ্ধান্ত নেন, যে কওমি মাদরাসার শিক্ষার্থীরা কীভাবে চলবে, সেভাবেই হচ্ছে। আমরা কোনো হস্তক্ষেপ করি না। তারপর হাইয়াতুল আউলিয়া, হাইয়াতুল আউলিয়া থেকে যা সিদ্ধান্ত নেন, সেখানেও আমরা হস্তক্ষেপ করি না।
‘আমরা শুধু বলি, আপনারা যে শিক্ষাটা দেন, যে সাবজেক্টটি পড়ান, আমাদেরকে জানান। আমরা যেন বলতে পারি, যারা দাওরায়ে হাদিস পাশ করে আসছে, যারা কওমি মাদরাসা থেকে শিখে আসছে, তারা সব জ্ঞানী, তারা সব জানে। আমি অনেক মাদরাসার শিক্ষক শিক্ষার্থীকে দেখেছি, যেভাবে তারা জ্ঞান অর্জন করে এসেছেন, আমি সব জায়গায় তাদের পারদর্শীতা দেখেছি।’
কওমি মাদরাসায় জঙ্গির উত্থান ঘটেনি জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, যখন জঙ্গিবাদের উত্থান হলো, তখন সবাই আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিত যে জঙ্গি এই মাদরাসা থেকে আসছে। আমরা তখন দাঁড়িয়ে বলেছিলাম, কওমি মাদরাসা দ্বীনের শিক্ষা দেয়, ইসলামের শিক্ষা দেয়। এখানে কখনো জঙ্গির উত্থান হতে পারে না, এখানে জঙ্গির উত্থান হয় না। সেজন্য আমরা মাথা উঁচু করে বলতে পারি, আমরা জঙ্গি দমন করেছি। আমাদের আলেম ওলামারা, মসজিদের মুয়াজ্জিন, সবাই আমাদের সহযোগিতা করেছিলেন।