জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্তসহ সব ধরনের প্রস্তুতি ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ করতে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা বলে জানিয়েছেন প্রেস সচিব শফিকুল আলম। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের নির্বাচনের জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়কে প্রশিক্ষণ দেওয়ারও নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা।
বুধবার (৯ জুলাই) রাতে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং-এর জাতীয় নির্বাচন নিয়ে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
শফিকুল আলম বলেন, প্রায় ২ ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকে নির্বাচন সংক্রান্ত আইনশৃঙ্খলা নিয়ে রিভিউ করা হয়েছে। এর মধ্যে অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। প্রথম নির্দেশনা হচ্ছে- নির্বাচনকে ঘিরে আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক যত প্রস্তুতি আছে, ডিসেম্বরের মধ্যে সব প্রস্তুতি নিতে বলেছেন। ডিসেম্বরের মধ্যে সব প্রস্তুতি শেষ করতে বলেছেন।
প্রেস সচিব বলেন, এই প্রস্তুতির মধ্যে অনেকগুলো বিষয় আছে। যেমন–আইনশৃঙ্খলাবাহিনীতে ১৭ হাজার নতুন সদস্য নিয়োগ করা হবে। এর মধ্যে আছে পুলিশ, বিজিবি, কোস্টগার্ড। নির্বাচনকে সামনে রেখে এই নিয়োগ দেওয়া হবে। তাদের নিয়োগ এবং প্রশিক্ষণ যাতে এই সময়ের মধ্যে শেষ হয়, সে বিষয়ে উনি (প্রধান উপদেষ্টা) নির্দেশ দিয়েছেন।
শফিকুল আলম বলেন,প্রেস সচিব বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা ১৮ থেকে ৩৩ বছর বয়সীদের পৃথক ভোটার তালিকা করা যায় কিনা–তা খতিয়ে দেখতে বলেছেন। তাঁদের জন্য আলাদা ভোটিং বুথ করা যায় কিনা–সেটিও দেখার কথা বলেছেন। এটি অবশ্যই একটি লজিস্টিক্যাল বিষয়, সেটা যাতে তারা (নির্বাচন কমিশন) খতিয়ে দেখেন, কীভাবে এনশিওর করা যায়।’
শফিকুল আলম বলেন, ভোটের আগে যে কোনো ধরনের ভায়োলেন্সকে যেন প্রতিহত করা যায় এবং ভোটের পরেও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যাতে ঠিক থাকে, সেটা নিয়েও যথেষ্ট আলোচনা হয়েছে। নির্বাচনের আগে ডিসি, এসপি, ওসি, ইউএনওদের রদবদল করার কথা বলা হয়েছে।
প্রেস সচিব বলেন, মিটিংয়ে বলা হয়েছে, নির্বাচনে ৪৭ হাজার ভোটকেন্দ্র থাকবে। এবং সমীক্ষা করে দেখা গেছে, এর মধ্যে ১৬ হাজারের মতো ভোটকেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। কীভাবে এসব কেন্দ্রে শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ করা যায় সেজন্য প্রধান উপদেষ্টা নির্দেশ দিয়েছেন। পুলিশের বডি ক্যামেরা থাকবে এবং প্রতিটি কেন্দ্র যাতে সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় থাকে সে বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও নির্বাচন যারা পরিচালনা করবেন তাঁদের পাশাপাশি ভোটারদেরও প্রশিক্ষণের কথা আজকের মিটিংয়ে আলোচনা হয়েছে। কেননা, অনেক ভোটার আছে যারা নতুন।
আবুল কালাম আজাদ বলেন, গত তিন নির্বাচনে যারা পোলিং ও প্রিজাইডিং অফিসার দায়িত্বে ছিলেন, তাঁদের বাদ দিয়ে এবারের নির্বাচনের কর্মকর্তাদের দায়িত্ব দেওয়া যায় কিনা–এই বিষয়টিও খতিয়ে দেখতে নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার ও সিনিয়র সহকারী প্রেস সচিব ফয়েজ আহম্মদ।