উত্তরবঙ্গবাসীর স্বপ্নের গ্যাস পাইপ লাইন উদ্বোধনের জন্য তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে ১৪ নভেম্বর। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চুয়ালি উদ্বোধন করবেন বলে গ্যাস ট্রান্সমিশন কোম্পানি লিমিটেড (জিটিসিএল) জানিয়েছে।
বগুড়া-রংপুর-সৈয়দপুর সঞ্চালন পাইপ লাইন প্রকল্পের পরিচালক খন্দকার আরিফুল ইসলাম বার্তা২৪.কমকে বলেছেন, রংপুরের পীরগঞ্জ প্রান্তে আগুণ জ্বালিয়ে দেখানো হবে। প্রধানমন্ত্রী ঢাকা থেকে ভার্চুয়ালি উদ্বোধন করবেন। আর পীরগঞ্জ প্রান্তে থাকবেন পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান জনেন্দ্র নাথ সরকার, জিটিসিএল ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী রূখসানা নাজমা ইসহাক, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
রংপুর অঞ্চলে গ্যাস সরবরাহের জন্য রাষ্ট্রীয় দু’টি কোম্পানি কাজ করছে। সঞ্চালনের দায়িত্বে রয়েছে জিটিসিএল, আর বিতরণ অংশের প্রকল্পের দায়িত্বে রয়েছে পশ্চিমাঞ্চল গ্যাস কোম্পানি লিমিটেড (পিজিসিএল)। সঞ্চালন কোম্পানি বগুড়া থেকে সৈয়দপুর পর্যন্ত সঞ্চালন লাইন নির্মাণ শেষ করেছে। তবে বিতরণ লাইনের কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত গ্রাহকরা এর সুবিধা পাচ্ছেন না।
মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) সঞ্চালনের উদ্বোধনের পাশাপাশি বিতরণ লাইনের কাজ উদ্বোধন করা হবে বলে পশ্চিমাঞ্চল গ্যাস কোম্পানি সুত্র নিশ্চিত করেছে। কোম্পানিটি বিতরণ লাইন নির্মাণের জন্য পৃথক প্রকল্প হাতে নিয়েছে। প্রকল্পের আওতায় থাকছে ১’শ কিলোমিটার পাইপ লাইন। এরমধ্যে রংপুর শহরে ৪৪ কিলোমিটার, পীরগঞ্জে ১০ কিলোমিটার, নীলফামারী ও উত্তরা ইডিজেড এলাকায় ৪৬ কিলোমিটার। বিতরণ লাইন নির্মাণ কাজ শেষ হবে ২০২৫ সালের জুনের মধ্যে ।
রংপুরের বধুমাতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি ছিল গ্যাস সরবরাহ। করোনার কারণে বিলম্বিত হয়েছে প্রকল্পের কাজ। বহুল কাঙ্খিত উত্তরের এই গ্যাস সঞ্চালন পাইপ লাইনটির ডিপিপিতে ২০২১ সালের জুনের মধ্যে শেষ করার লক্ষ্য ছিল। পরে মেয়াদ বাড়িয়ে ২০২২ সালের ডিসেম্বর করা হয়। ভূমি অধিগ্রহণ জটিলতা ও করোনার কারণে ২০২৩ সালের জুনে শেষ হয়।
প্রকল্পের আওতায় (বগুড়া থেকে রংপুর হয়ে সৈয়দপুর) ৩০ ইঞ্চি ব্যাসের ১৫০ কিলোমিটার সঞ্চালন পাইপ লাইন স্থাপন করা হবে। ১০০ এমএমএসসিএফডি সিজিএস (সিটি গেট স্টেশন) ৫০ (রংপুর) এবং ২০ (পীরগঞ্জ) এমএমএসসিএফডি ক্ষমতাসম্পন্ন টিবিএস (টাউন বর্ডার স্টেশন) স্থাপন করা হবে।
শিল্প কারখানার অন্যতম নিয়ামক শক্তি হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে প্রাকৃতিক গ্যাস। যে অঞ্চলে গ্যাসের সরবরাহ যতো আগে নিশ্চিত হয়েছে সেই অঞ্চলে শিল্প ততো এগিয়ে রয়েছে। উত্তরাঞ্চলে গ্যাস সরবরাহ না থাকায় শিল্পের প্রসার নেই বললেই চলে। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা মনে করেন গ্যাসের বিকল্প জ্বালানি ব্যবহার করে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা সম্ভব নয়। তাই রংপুর অঞ্চলে শিল্প কারখানা স্থাপনে সাহস দেখান নি। এতে বিশাল অর্থনৈতিক বৈষম্য তৈরি হয়েছে। গ্যাস সরবরাহ পেলে রংপুর অঞ্চলেও শিল্প কারখানা গড়ে উঠবে। চাপ কমে আসবে রাজধানী ঢাকার উপর। সে কারণে আশায় বুক বেঁধে আছে রংপুর অঞ্চলের বাসিন্দারা।