আটলান্টিক সংবাদ নিউজ ডেস্ক: যুক্তরাষ্টের আটলান্টিক সিটিতে প্রথবারের মত স্থানীয় সেন্ট ক্যাসেল ষ্টেডিয়ামে হাজার হাজার মুসলমান একসাথে আদায় করল পবিত্র ঈদুল আযহার নামাজ। গত ২৮ জুন বুধবার ২০২৩ “লাব্বাইকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইক” শব্দে মুখরিত হয়ে উঠেছিল যুক্তরাষ্টের আটলান্টিক সিটির সেন্ট ক্যাসেল ষ্টেডিয়াম। নিউজার্সী অঙ্গরাজ্যের আটলান্টিক সিটিতে এইবারই প্রথম এত বড় নামাজের জামাত অনুষ্ঠিত হল। হাজার হাজার মুসলিমদের এই সমাবেশ নিউজার্সীর প্রবাসী বাংলাদেশী মুসলিমদেরকে কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ার ঈদের জামাতের কথা স্বরণ করিয়ে দেয়। বিশ্বের প্রায় ২০ থেকে ২৫টি দেশের মুসলমানরা পবিত্র ঈদুল আষহার এই ঐতিহাসিক নামাজে শামিল হন। হাজারো মুসলমানের এই নামাজ আদায়ের মাধ্যমে চারটি মসজিদের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের দীর্ঘ দুই মাসের প্রচেষ্টার সফল সমাপ্তি ঘটে। পবিত্র ঈদুল আযহার নামাজের খুতবা এবং নামাজের ঈমামতি করেন ঈমাম শেখ কামাল।খুতবায় তিনি ইসলামী শরিয়ার উপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করেন এবং সারা বিশ্বের মুসলিমদের শান্তি কামনা করে মুনাজাত করেন।
আটলান্টিক সিটির নিকটবর্তী চারটি মসজিদ, মসজিদ আল তাকওয়া, আটলান্টিক সিটির ইসলামিক সেন্টার অব আটলান্টিক সিটি, গ্যালওয়ে সিটির দারুস সালাম একাডেমী, এবসিকন সিটির মসজিদ বায়তুল নাসের এর কর্মকর্তাদের সার্বিক সহযোগিতায় সাউথজার্সীর মুসলিমদের এই বৃহৎ জামাত আয়োজন করা সম্ভব হয়েছে বলা জানান আয়োজকবৃ্ন্দ।
সকাল ০৭:৩০ মিনিটে বিভিন্ন মসজিদের মুসল্লীদের “আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার। লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু, আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, ওয়া লিল্লাহিল হামদ( আল্লাহ মহান, আল্লাহ মহান,আল্লাহ্ ছাড়া কোন উপাস্য নেই,আল্লাহ্ মহান, আল্লাহ্ মহান,সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ্র জন্য )।”সমবেত স্বরের আওয়াজ পৌঁছে যায় স্টেডিয়ামের গন্ডি ফেরিয়ে নিকটবর্তী এলাকায়। মসজিদ মসজিদ আল তাকওয়ার সভাপতি মিয়া তারেক, মুসলিম সেন্টার অব আটলান্টিক সিটির প্রতিষ্ঠাতা ইকবাল হোসাইন, গ্যালওয়ে সিটির দারুস সালাম একাডেমীর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ডাঃ মাহফুজ এবং মসজিদ বায়তুল নাসের এর ঈমাম বেলালের সমন্বিত প্রচেষ্টার ফসল হাজার মানুষের সমাবেশ।সকাল ৬টা থেকে সংশ্লিষ্ট সকল বিভাগের ভলন্টিয়ার তাদের কাজ পূর্ববর্তী পরিকল্পনা অনুযায়ী শূরু করেন। তবে বাংলাদেশী মুসলমানদের সহযোগিতা ছিল চোখে পড়ার মত।
মুসলিম সেন্টার অব আটলান্টিক সিটির প্রতিষ্ঠাতা ইকবাল হোসাইন জানান নিউজার্সীর মুসলিমদের মধ্যে ধর্মীয় মূল্যবোধ এবং আন্তরিকতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে আটলান্টিক সিটি এবং পাশ্ববর্তী চারটি মসজিদের মুসল্লীদের সমন্বয়ে একটি ঈদের জামাত আদায় ছিল সময়ের দাবী।তিনি বলেন দেড় শতাধিক মুসল্লীর ভলন্টিয়ারী সার্ভিস এবং সহযোগিতার কারনে এত বড় নামাজের জামায়াত আয়োজন সম্ভব হয়েছে।
মসজিদ আল তাকওয়ার সভাপতি মিয়া তারেক শতাধিক মুসল্লীর ভলন্টিয়ারী সার্ভিসকে বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন ভবিষ্যতে ঈদুল ফিতর এবং ঈদুল আযহার নামাজের জামাত একসাথে করার ব্যাপারে আলান্টিক কাউন্টিতে বসবাসরত মুসলমানরা এক ধাপ এগিয়ে গেল।
গ্যালওয়ে সিটির দারুস সালাম একাডেমীর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ডাঃ মাহফুজ এবং তানভীর আহমেদ বলেন কোরআন এবং হাদিসে ঈদুল ফিতর এবং ঈদুল আযহার নামাজের জামাত একসাথে আদায় করার ব্যাপারে বিশেষভাবে গুরুত্বারোপ করা হয়েছে ।তারা বলেন সৌদি আরবে যদি ৩০ লক্ষাধিক মুসলমান একসাথে হজ্জ আদায় করতে পারে তাহলে আমরা কেন পারবো না।মসজিদ বায়তুল নাসের এর ঈমাম বেলাল এই ধরনের উদ্যোগ নেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ঠ সবাইকে ধন্যবাদ জানান।
ঈদের নামাজের সংবাদ প্রচারে সহযোগিতার জন্য দ্যা প্রেস অব আটলান্টিক সিটির সংবাদাতা এবং বাংলাদেশ প্রেস ক্লাব অব আটলান্টিক সিটির সভাপতি এবং আটলান্টিক সংবাদ এর এডিটর ইন চীফ আকবর হোসাইন ও বাংলাদেশ প্রেস ক্লাব অব আটলান্টিক সিটির সাধারন সম্পাদক এবং আটলান্টিক সংবাদের এডিটর মোঃ শাহিনকে আয়োজকদের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানানো হয়।
ঈদের নামাজ শেষে ত্যাগের মহিমায় মহিমান্বিত হয়ে পশু কোরবানী দেয়ার জন্য স্থানীয় বিভিন্ন ফার্মে মুসলমানরা ছুটে যান এবং ইসলামিক রীতিনীতি অনুযায়ী যথারীতি মহান আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য কোরবানীর কাজ সম্পাদন করেন। যাদের চাকুরীতে ছুটি ছিলনা তারা আটলান্টিক সিটির গ্রোসারীগুলোতে তাদের কোরবানীর অর্ডার দেন। সর্বপূরী আবহাওয়া ভাল থাকায় নিউজার্সীর আটলান্টিক সিটিতে এইবারের ঈদের আয়োজন ছিল মনে রাখার মত।