আন্তর্জাতিক ডেস্ক: হামাস-ইসরাইল সংঘাতের মধ্যে মধ্যপ্রাচ্যে ছয়টি যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করেছে চীন। গাজায় ইসরাইলের বিরামহীন বিমান হামলার ফলে পুরো মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাত ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতেই গত সপ্তাহে মধ্যপ্রাচ্যে ছয়টি যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করে চীন।
সংবাদমাধ্যম গ্লোবাল টাইমসের প্রতিবেদনে সোমবার (২৩ অক্টোবর) এই তথ্য প্রকাশিত হয়েছে।
এই প্রসঙ্গে চীন জানিয়েছে, ‘মধ্যপ্রাচ্যে নিয়মিত টহল মিশন ও প্রীতি সফরের অংশ হিসেবে যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করা হয়েছে। কোনো সংঘাতে জড়ানোর জন্য নয়।’
চীনা সেনাবাহিনীর মতে, গাইডেড মিসাইল ডেস্ট্রয়ার জিবো, গাইডেড মিসাইল ফ্রিগেট জিংঝু ও কৌশলগত সহায়ক জাহাজ কিয়ানদাওহু-এই তিনটি যুদ্ধজাহাজের সমন্বয়ে গঠিত ৪৪তম নৌবহর গত ১৮ অক্টোবর কুয়েতের সুয়াইখ বন্দরে পৌঁছায়।
অন্যদিকে চাইনিজ পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ) জানায়, গাইডেড মিসাইল ডেস্ট্রয়ার উরুমকি, গাইডেড মিসাইল ফ্রিগেট লিনি ও কৌশলগত সহায়ক জাহাজ ডংপিংহু’র সমন্বয়ে গঠিত ৪৫তম চীনা নৌবহর এডেন উপসাগর ও সোমালিয়ার জলসীমায় ৪৪তম নৌবহরের সঙ্গে টহল অভিযানে অংশ নেবে।
গত দুই সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজা উপত্যকায় বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরাইল। এই সংঘাতের ক্ষেত্রে বিশ্ব কার্যত দুইভাগে বিভক্ত হয়ে গেছে।একদিকে ইসরাইলকে সমর্থন দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্র পশ্চিমারা। অন্যদিকে নিপীড়িত ফিলিস্তিনিদের পক্ষে সমর্থন জানিয়েছে চীন ও রাশিয়া। ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে চলমান যুদ্ধের কারণে এমন পদক্ষেপ নিয়েছে বলে গুজব ছড়িয়ে চলেছে পশ্চিমা গণমাধ্যম।
গুজব প্রসঙ্গে ওয়াশিংটনে নিযুক্ত চীনা দূতাবাসের মুখপাত্র লিউ পেঙ্গু বলেন, পশ্চিমা গণমাধ্যমের মধ্যপ্রাচ্যে চীনের যুদ্ধজাহাজ মোতায়েনের বিষয়ে ‘ভিত্তিহীন প্রচার’ বন্ধ করা উচিত।
রোববার (২২ অক্টোবর) রুশ সংবাদমাধ্যম স্পুটনিককে দেয়া সাক্ষাৎকারে লিউ পেঙ্গু বলেন, ‘চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মি নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজের বহরটি একটি নিয়মিত টহল মিশনের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেছে এবং সংশ্লিষ্ট দেশগুলোতে বন্ধুত্বপূর্ণ সফর করছে। এই সত্যকে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের শ্রদ্ধা প্রদর্শন এবং ভিত্তিহীন প্রচার বন্ধ করা উচিত।’
সাংহাই ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজ ইউনিভার্সিটির মিডল ইস্ট স্টাডিজ ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ডিং লং বলেন, ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো আন্তর্জাতিক বিরোধ সমাধানের ক্ষেত্রে চীন কখনই সামরিক হস্তক্ষেপ পছন্দ করবে না।
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যেকোনও জরুরী পরিস্থিতিতে দ্রুত সাড়া দেয়ার ক্ষেত্রে টহল মিশনগুলো কাজে লাগাতে পারবে চীন। উদাহরণস্বরূপ, চলতি বছরের শুরুতে সুদানে সংঘাত শুরু হলে চীনা নাগরিকদের সরিয়ে নেয়ার ক্ষেত্রে চীনা নৌবহর বেশ সহায়ক হয়েছিল। এ ধরনের যেকোনো পরিস্থিতির উদ্ভব হলে ওই সামরিক জাহাজগুলো দ্রুত কাজে যুক্ত হতে পারবে।